নোটিশ
আপনি কি ব্লগ কিংবা ফেসবুকে ইসলাম এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে আগ্রহী?
তাহলে আপনার লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। ধন্যবাদ

Sunday, December 24, 2017

যাকাত ও সদাক্বাহ

যাকাতের আভিধানিক অর্থঃ পবিত্রতা ও প্রবৃদ্ধি।
যাকাতের পারিভাষিক অর্থঃ বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে বিশেষ এক শ্রেণীর লোককে বিশেষ প্রকারের মালের মালিক বানিয়ে দেয়াকে যাকাত বলে।
যাকাত ইসলামের পঞ্জস্তম্ভের একটি বিশেষ স্তম্ভ। যা অসহায় গরীবদেরকে দেয়া হয়। এর দ্বারা পারস্পরিক ভালবাসার সেতুবন্ধন ও ধনী-গরীবদের মাজে ভ্রাতৃত্ববোধ সৃষ্টি হয়।

যাকাত বিষয়ে পবিত্র কোরআন কারীমে বলা হয়েছে- 
‘নিশ্চয়ই ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য; (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে। এটি আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত, আর আল্লাহ  মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়’ (তওবা ৯, আয়াত-৬০)।

উক্ত আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা যাকাত প্রদানের ৮টি খাত উল্লেখ করেছেন-
(১) ফকীর।
(২) মিসকীন।
(৩) যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারী।
(৪) ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা।
(৫) দাস মুক্তির জন্য।
(৬) ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি।
(৭) আল্লাহর রাস্তায়।
(৮) মুসাফির।

যাকাত বিষয়ে হাদীসে এসেছে-
মুহাম্মদ ইবনু ‘আবদুল্লাহ ইবনু মূসান্না আনসারী (রহঃ) ... আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, আবূ বকর (রাঃ) তাঁকে বাহরাইন পাঠানোর সময় এই বিধানটি তাঁর জন্য লিখে দেনঃ

বিসমিল্লাহীর রাহমানির রাহীম। এটাই যাকাতের নিসাব যা নির্ধারণ করেছেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলিমদের প্রতি এবং যা আল্লাহ তা‘আলা তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে নির্দেশ দিয়েছেন। মুসলিমদের মধ্যে যার কাছ থেকে নিয়মানুযায়ী চাওয়া হয়, সে যেন তা আদায় করে দেয় আর তার চেয়ে বেশী চাওয়া হলে তা যেন আদায় না করে। চব্বিশ ও তার চাইতে কম সংখ্যক উটের যাকাত বকরী দ্বারা আদায় করা হবে। প্রতি পাঁচটি উটে একটি বকরী এবং উটের সংখ্যা পঁচিশ থেকে পঁয়ত্রিশ পর্যন্ত হলে একটি মাদী বিনতে মাখায (যে উটের বয়স এক বছর পূর্ণ হয়েছে)। ছত্রিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ পর্যন্ত একটি মাদী বিনতে লাবূন (যে উটের বয়স দু’বছর পূর্ণ হয়েছে)। ছয়চল্লিশ থেকে ষাট পর্যন্ত ষাঁড়ের পেলযোগ্য একটি হিককা (যে উটের বয়স তিন বছর পূর্ণ হয়েছে) একষট্টি থেকে পঁচাত্তর পর্যন্ত একটি জাযা‘আ (যে উটের বয়স চার বছর পূর্ণ হয়েছে) ছিয়াত্তর থেকে নব্বই পর্যন্ত দু’টি বিনতে লাবূন, একানব্বইটি থেকে একশ’ বিশ পর্যন্ত ষাঁড়ের পেলযোগ্য দু’টি হিককা। সংখ্যায় একশ’ বিশের অধিক হলে (অতিরিক্ত) প্রতি চল্লিশটিতে একটি করে বিনতে লাবূন এবং (অতিরিক্ত) প্রতি পঞ্চাশটিতে একটি করে হিককা।
যার চারটির বেশী উট নেই, সেগুলোর উপর কোন যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দিতে চাইলে দিতে পারবে। কিন্তু যখন পাঁচে পৌঁছে তখন একটি বকরী ওয়াজিব। আর বকরীর যাকাত সম্পর্কেঃ সায়েমা বকরী চল্লিশটি থেকে একশ’ বিশটি পর্যন্ত একটি বকরী। এর বেশী হলে দু’শটি পর্যন্ত দু’টি বকরী। দু’শর অধিক হলে তিনশ’ পর্যন্ত তিনটি বকরী। তিনশ’র অধিক হলে প্রতি একশ’ তে একটি করে বকরী। কারো সায়েমা বকরীর সংখ্যা চল্লিশ থেকে একটিও কম হলে তার উপর যাকাত নেই। তবে স্বেচ্ছায় দান করলে তা করতে পারে। রূপার যকাত চল্লিশ ভাগের এক ভাগ। একশ নব্বই দিরহাম হলে তার যাকাত নেই, তবে মালিক স্বেচ্ছায় কিছু দান করলে করতে পারে।
সূত্র:
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
 গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) 
 অধ্যায়ঃ ২১/ যাকাত (كتاب الزكاة) 
 হাদিস নম্বরঃ ১৩৭০

অন্য হাদীসে এসেছে-
আহমদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) … ঊম্মে ‘আতিয়্যা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নুসায়বা নাম্নী আনসারী মহিলার জন্য একটি বকরী (সাদকা স্বরূপ) পাঠানো হল। তিনি বকরীর কিছু অংশ ‘আয়িশা (রাঃ) কে (হাদিয়া স্বরূপ) পাঠিয়ে দিলেন। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তোমাদের কাছে (আহার্য) কিছু আছে কি? ‘আয়িশা (রাঃ) বললেন, নুসায়বা কতৃক প্রেরিত সেই বকরীর গোসত ব্যতীত আর কিছুই নেই। তখন তিনি বললেনঃ তাই নিয়ে এসো, কেননা বকরী (সা’দকা) যথাস্থানে পৌঁছে গেছে (সা’দকা গ্রহীতার নিকট)।
সূত্র:
পাবলিশারঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন
 গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) 
 অধ্যায়ঃ ২১/ যাকাত (كتاب الزكاة) 
 হাদিস নম্বরঃ ১৩৬১


0 comments:

Post a Comment