সমালোচনা!
মাওলানা আতিক উল্লাহ
সমালোচনা দুই প্রকার,
১: যৌক্তিক সমালোচনা।
২: অযৌক্তিক সমালোচনা।
সমালোচকও দুই প্রকার।
১: আন্তরিক সমালোচক।
২: হিংসুটে সমালোচক।
উভয় ভাগ মিলিয়ে সমালোচনাকে চার ভাগে বিভক্ত করতে পারি।
১: আন্তরিক সমালোচকের যৌক্তিক সমালোচনা।
২: আন্তরিক সমালোচকের অযৌক্তিক সমালোচনা।
৩: হিংসুটে সমালোচকের যৌক্তিক সমালোচনা।
৪: হিংসুটে সমালোচকের অযৌক্তিক সমালোচনা।
কেউ আমার সমালোচনা করলে, আমি প্রথমে সমালোচনার দিকেই নজর দেব। মনকে শান্ত রেখে, নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করে দেখব, সমালোচনাটা যৌক্তিক কি না।
আমার মতো দুর্বলচিত্তদের মানসিকতা হল, প্রথমেই সমালোচকের দিকে রোষ দৃষ্টি ফেলা। তার নিয়্যতের সুলুকসন্ধানে নেমে পড়া। এটা বোধ হয় ঠিক নয়। ভারসাম্যপূর্ণ মানসিকতা নয়।
বলাবাহূল্য, চারপ্রকারের মধ্যে প্রথম ও তৃতীয় প্রকারের সমালোচনা গ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি সমালোচিত ব্যক্তিও দুই প্রকার,
১: যৌক্তিক-অযৌক্তিক সব ধরনের সমালোচনাই সহ্য করতে পারে না। হজম করতে পারে না। উল্টো নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের জন্যে উঠেপড়ে লাগে। নিজের ভুলকে মেনে না নিয়ে, সমালোচকের দোষ খুঁজতে শুরু করে দেয়। তাকে কিভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করা যায়, অহর্নিশি তা নিয়েই পড়ে থাকে আর ব্যর্থ নিষ্ফল আক্রোশে দাঁত কিড়মিড় করে।
এরা অহংকারী। দাম্ভিক। একগুঁয়ে। এদের পতন আসন্ন।
২: সমালোচনার সম্মুখীন হলে, থমকে দাঁড়ায়। বোঝার চেষ্টা করে, সমালোচনাটা যৌক্তিক কি না! আশেপাশের মানুষের সাথে পরামর্শ করে দেখে। যৌক্তিক হলে সংশোধনে ব্রতী হয়। সমালোচক অন্তরিক না হিংসুটে সে বিচার নিয়ে অযথা সময় নষ্ট করে না।
সমালোচক আন্তরিক হলে, তার প্রতি মহব্বত বৃদ্ধি পায়।
সমালোচক হিংসুটে হলেও তার প্রতি ‘দ্বেষ’ পোষণ করা উচিত নয়। সে হিংসুটে মন নিয়ে সমালোচনা করলেও, আখের আমার উপকারই তো করল।
এমন উপকারীর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা কুরআনি বিধান। সূরা ইবরাহীম ৭ আয়াত দ্রষ্টব্য। তবে তার ব্যাপারে সতর্ক থাকা কাম্য। কারন আজ যৌক্তিক সমালোচনা করলেও, তার অন্তরে পুষে রাখা হিংসা,কাল তাকে অযৌক্তিক ‘সমালোচনা করতে উদ্বুদ্ধ করবে না, এটা হলফ করে বলা যায় না। এটাও কুরআনি বিধান। সূরা নিসা ৭১ আয়াত দ্রষ্টব্য।
যৌক্তিক সমালোচনা সব সময়ই উর্বর। সৃষ্টিশীল। উপাদেয়। প্রার্থিত। কামনার। লোভনীয়।
0 comments:
Post a Comment