নোটিশ
আপনি কি ব্লগ কিংবা ফেসবুকে ইসলাম এবং সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ে লেখালেখি করতে আগ্রহী?
তাহলে আপনার লেখা পাঠিয়ে দিন আমাদের কাছে। বিস্তারিত তথ্যের জন্য আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ দিন। ধন্যবাদ

Wednesday, November 22, 2017

মুসলিম উম্মাহর নাক কেটে কলঙ্কিত এক পরাজয় উপহার দিয়ে ইরাক সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বিদায় নিল ইসলামিক স্টেট্স ইন্ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া

মুসলিম উম্মাহর নাক কেটে কলঙ্কিত এক পরাজয় উপহার দিয়ে ইরাক সিরিয়ার বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে বিদায় নিল ইসলামিক স্টেট্স ইন্ ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া।
মাওলানা হারুন ইযহার
(মাওলানা হারুন ইযহার)
অহমিকা,হঠকারিত আর সীমালঙ্ঘনের অপরিহার্য পরিণাম হলো পতন। এর আগে একই বাড়াবাড়ির কারণে বিগত শতকের শেষ দশকের আলজেরিয়ায় সশস্ত্র তৎপরতা চুড়ান্ত পর্যায়ে ব্যর্থ হয়েছিল। আলজেরিয়া, তিউনেসিয়ার তাকফিরের গোষ্ঠীই আই এসে যোগ দিয়েছিল।

অনেকে আই এসকে ইসরাইল- আমরিকার সৃষ্টি এবং অনেকেই তাদেরকে খারেজী মনে করেন।এসব তথ্য ভুল। চিন্তার অালস্য আর তথ্য সংগ্রহের সাধনা না করে এরকম সস্তা মন্তব্য আমাদের মজ্জাগত স্বভাব। তবে তারা এসব ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত ছিল তাদের অজানাতেই।

আমরা যদি বিচারমূলক মূল্যায়নে যেতে চাই তাহলে উম্মাহর ব্যর্থতার দৃষ্টান্তগুলো খুঁজে পাব মূলধারার নিয়মতান্ত্রিক ইসলামি আন্দোলনেও। উভয়টা ব্যর্থতা, রূপ ভিন্ন। একটা বাড়াবাড়ি একটা ছাড়াছাড়ি।
নিম্নে উভয় মানহাজের সমালোচনায় আমরা সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ তুলে ধরছি। 

মূলধারার ইসলামপন্থাকে বিদ্যমান রাষ্ট্রিক ও সামাজিক কাঠামোর বেলায় جاهلية আর طاغوت এর মত Term গুলো ব্যবহার করতে দেখা যায়না। شرك এর আধুনিক আপডেট যা প্রচলিত ঐ রাষ্ট্রিক কাঠামোর সাংবিধানিক চেতনায় বিদ্যমান তাকেও আকিদাহ্'র পরিভাষা দ্বারা ক্রিটিক করতে দেখা যায়না। আবার এসব উপসর্গের উপশম করে ইসলামী সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে মেথডগুলো কোরআন,সুন্নাহ্ তথা সীরাতে বিবৃত আছে পরিস্ফুটভাবে যেমন -دعوة جهاد هجرة نصرة ولاء براء صلح عهد بيعة -এসবের কোন প্রকার দৃশ্যমান বাস্তবতা দূরবীন দিয়েও খুঁজে পাবেননা এখানে। 

অর্থাৎ এসব পরিভাষার অনস্তিত্ব প্রচলিত ইসলামপন্থার চিরাচরিত ব্যাপার।

তো এটা কি নিছক উদাসীনতা নাকি গোড়ায় গলদ? মানে ইসলামপন্থীরা রাজনীতির মেরুকরণে আকীদাহ্'কে বিবেচ্য মনে করেননা? নবীর সা. অনুসৃত পথ ও পদ্ধতিকে বিস্মৃতির সিন্দুকে তালাবদ্ধ রেখে দিয়েছেন?

হ্যাঁ,এমনটাই মনে হয় বাস্তব। 

তাহলে বলা যায় মূলধারার ইসলামপন্থা একটা রাজনৈতিক بدعة এ লিপ্ত হয়েছেন। তারা مرجئه না হয়েও إرجاء এর শিকার ।

গণতন্ত্রের পিছনে কোন শক্তিশালী اجتهاد এবং تاويل খাড়া করতে পারেনি ইসলামপন্থীরা। শুধু কিছু আকাবিরদের নজির পেশ করা ছাড়া। অথচ আকাবিরীনে দেওবন্দ বা ইখওয়ানের প্রথম সারির মুরব্বীগণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে স্থায়ী মানহাজ্ মনে করেননি কখনো। 

এটা হলো ইসলাম চর্চায় تفريط বা স্খলনের উদহারণ।

তাহলে إفراط বা সীমালঙ্ঘনের নজির কারা? তারা হলেন যারা جاهليه,طاغوت এবং আধুনিক شرك - এসব পরিভাষার বিচারে বিদ্যমান কাঠামোর সমালোচনা করেন। এটা করে তারা প্রমাণ করলেন তাদের আকিদাহ্'র পাঠ কতোটা সহিহ এবং সুসংহত। চিন্তার এ জায়গায় তারা উম্মাহর জন্য সঠিক পথপ্রদর্শক হতে পারতেন। কিন্তু মসিবত হলো তারা তাগুত, শিরক আর জাহিলিয়াতের প্রতিকারে অবিলম্বেই সশস্ত্র পন্থার মেথড প্রচারে সিদ্ধহস্ত। دعوة বিবর্জিত جهاد এর এমন এক খোঁড়া ও প্রতিবন্ধী কর্মসূচি তারা হাতে নিয়ে ফেললেন যা তাকফিরের পরিধি বিস্তৃত করল এবং নতুন فتنةএর জন্ম দিল।

এই মানহজকে আমরা ফিৎনা বলছি কেননা তারা কুফফার কর্তৃক বন্দুকের জোরে দখলকৃত ভূমি আর কুফফারের আইনে পরিচালিত মুসলিম জন অধ্যুষিত এলাকা - সবটাকে একাকার করে ফেলেছেন। 

এখানে তাদের ভুলটা তাদের নিয়্যাহ্ বা আকিদাহ্'র মধ্যে না। সমস্যাটা فقه الواقع এর উপলদ্ধির মধ্যে। যেটা হয়েছে সামগ্রিক উসূলী দৃষ্টিভঙ্গির স্থলে শরীয়াহ্'র খন্ডিত টেক্সটের আবেগপ্রবণ পাঠের কারণে। আই.এস বা داعش হলো এর একটা নজির, যারা خوارج নন কিন্তু তারা সে চেতনা দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত ।

তাহলে সলিউশন কী?

অতি সংক্ষেপে, আই এস কে তাদের আগের মুরুব্বীদের বাই'আত আর নীতিতে ফিরে যেতে হবে,বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে যাদের কতৃত্ব অক্ষুন্ন আছে এখনো অদৃশ্যভাবে।

আর ইসলামি রাজনীতির মূলধারাকে তাদের বিংশ শতকের পূর্বসূরিদের বৈপ্লবিক দা'ওয়াতের লিটরিচারে ফিরে যেতে হবে। ইখওয়ানকে ফিরতে হবে কুতুবে, জামাতকে ফিরতে হবে প্রতিষ্ঠাকালের সেই আগের মূল বয়ানে , আর কওমীকে ফিরতে হবে দেওবন্দের চার মূলনীতিতে। কেল্লা ফতেহ্!

0 comments:

Post a Comment